অফিস বা কর্মস্থল এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন পেশাজীবী তাদের পেশা সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পন্ন করেন। অফিসের বর্তমান ব্যবস্থায় বিশ্বগ্রাম ধারণাটি সবচেয়ে সুন্দরভাবে প্রকাশ পায়। আমরা কোনো তথ্যের জন্য কোনো কোম্পানির অফিসে ফোন করলে বা অন্য কোনোভাবে যোগাযোগ করলে কখনোই নিশ্চিতভাবে বলতে পারব না, পৃথিবীর কোন প্রান্ত বা কোন দেশ থেকে সেই ফোনের বা সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আধুনিক অফিস ইকুইপমেন্টস, আইসিটি ও বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে অফিসের সার্বিক কার্যক্রম অত্যন্ত সহজে, স্বচ্ছতা এবং দৃশ্যমান গতিশীলতার সাথে করা সম্ভব হচ্ছে। সরকারি অফিসসহ বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণাগার, শিল্পকারখানা ইত্যাদি কর্পোরেট অফিসগুলো আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে সার্বিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automated) কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আর দ্রুততার সাথে সম্পাদন করে অফিসগুলো কাগজবিহীন ডিজিটালাইজড অফিসে পরিণত হয়েছে। এর ফলে বদলে যাচ্ছে অফিসের ফাইলিং সিস্টেম এবং প্রাত্যহিক কার্যপ্রক্রিয়া।
আজকের বিশ্বায়ন ব্যবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে গতানুগতিক অফিস-ব্যবস্থা একটি বড় পরিবর্তনের পথে রয়েছে। অনেকেই নিজ দেশে কিংবা অন্য দেশে থেকে বাসায় বসে কাজ করেন, অনেককেই নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বজায় রাখতে হয় না। উত্তর আমেরিকার সাথে আমাদের প্রায় বারো ঘণ্টা সময়ের পার্থক্য থাকার কারণে দুই মহাদেশে দুইটি অফিস রেখে, কয়েক শিফটে সেটি দিন-রাত্রি মিলে চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। 'গুগল' সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবহিত আছি, ড্রপবক্স গুগল ড্রাইভ, Office 365, Google docs ইত্যাদি সার্ভিসে আমরা আমাদের যাবতীয় ফাইল তৈরিসহ নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষণ করতে পারি এবং বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে সেখানে কাজ করতে পারি। অফিসের সবধরনের মিটিংয়ের ক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্সিং করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারি।
তবে অফিস যান্ত্রিকায়নের ফলে অনভিজ্ঞ মানুষের কর্মসংস্থান কমে যায়। তেমনি গ্রাহকের সাথে ব্যবস্থাপনার মিথষ্ক্রিয়া (interaction) এবং একই সাথে সহকর্মীদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ হ্রাস পায়। জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে তথ্য সরক্ষণের জন্য বড় বড় তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানির ডেটা সেন্টারগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা হলে সবসময় একধরনের ঝুঁকি থেকে যায়।